প্রত্যয় ডেস্ক, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম কচুবাড়ি কৃষ্টপুরের পুরোধা মকছেদ আলীর পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগ সহনীয় ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক ড, কে এম কামরুজ্জামান সেলিম মরহুমের স্ত্রীর হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।
৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসে মঙ্গলবার দুপুরে নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম গঠনের উপহার হিসেবে জেলা প্রশাসক ড, কে এম কামরুজ্জামান সেলিম সালন্দর ইউনিয়নের কচুবাড়ি কৃষ্টপুর গ্রামে যান এবং মকছেদ আলীর স্ত্রীর হাতে দূর্যোগ সহনীয় ঘরের চাবি তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর আলম মুকুল। জেলা প্রশাসক মহোদয় মকছেদ আলীর সমাধিস্থল পাকাকরনে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
গত বছর এইদিনে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড কে এম কামরুজ্জামান সেলিম তার বাসার ভগ্ন অবস্থা দেখে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নতুন গৃহ প্রদানের নির্দেশনা দেন। সেই অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক সেই পরিবারের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করা হয়।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর দেশব্যাপী সাক্ষরতা আন্দোলনের ডাক দিলে সেই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কচুবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের শিক্ষিত যুবক মকছেদ আলী। তিনি বাড়ির পাশে পল্লী উন্নয়ন নামে একটি ক্লাবে স্থানীয় মানুষজনকে নিয়ে পাঠশালা গড়ে তোলেন। বিনা পারিশ্রমিকে স্থানীয় মানুষজনকে অক্ষর জ্ঞান দেন।
সেসময় বাংলাদেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ের কচুবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামকে ঘোষনা করা হয়। ১৯৭৩ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী মকছেদ আলরি সফলতা দেখতে ছুটে আসেন তার বাড়িতে। সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ আলী, চিত্রপরিচালক চাষী নজরুল ইসলামসহ দেশবরেণ্য আরো অনেকে।
১৯৭৪ সালে মকছেদ আলীকে রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত করা হয়। ২০০০ সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন মকছেদ আলী। ২০০৭ সালে এক রকম বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় মকছেদ আলীর।
রিপোর্টঃ বদরুল ইসলাম বিপ্লব